জাপিত জীবনের সাতকাহন (হার্ডকভার) | Zapito Jiboner Satkahon (Hardcover)

জাপিত জীবনের সাতকাহন (হার্ডকভার)

৳ 400

৳ 340
১৫% ছাড়
Quantity

0

১৪৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY

প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা পর্যন্ত ছাড়। কুপন: FIRSTORDER

বই সংক্ষেপ
লেখক

আমার জীবনের গল্প এটি। গল্পের শুরুটা হয়েছিল ফাল্গুন মাসে। বহে দখিনা সমীরণ, পাতা ঝরার মর্মর শব্দ আর গাছে থোকা থোকা আম্র মুকুল। শিমুল পলাশের রংয়ে রঙিন হয়েছিল প্রকৃতি। খ্রীষ্টীয় পঞ্জিকা মতে মার্চের এমনই একটি দিনে জন্ম আমার। মা বলেছিল, দিনটি ছিল সোমবার। আমার মায়ের নাম মোছাম্মৎ জোবায়দা খাতুন। ভূমিষ্ঠ হবার পর আমি নাকি কাঁদি নি। আরও বলেছিল, বাবা আমার শান্তশিষ্ট হবে। মা সীমাহীন আনন্দিত হয়েছিল। তাঁর বড় ছেলের জন্মের পাঁচ বছর পর আমার জন্ম। আবার আমার বড় ভাইয়ের জন্মের পাঁচ বছর আগে জন্মেছিল আমার এক বোন। বাঁচেনি, জন্মের কিছুদিন পর মারা যায়। ওর নাম রাখা হয়েছিল ‘আনোয়ারা'। তাই আব্বা জীবনভর মা কে ‘আনোর মা’ ব'লে ডাকতেন। আমার বেড়ে উঠা গাছপালা, লতাপাতা ঘেরা চিরহরিৎ গ্রামে। শৈশব-কৈশোর কেটেছে এ মায়াময় তরুতলে। জীবন খাতার শেষ পাতায় দাঁড়িয়ে ওবেলায় ফেলে আসা দিনগুলো মনের মাঝে উঁকিঝুঁকি দেয় প্রতিনিয়ত। লেখার পরতে পরতে লুকিয়ে আছে সেসব দিনের গোপন কথা। গ্রামখানি ছিল সর্বসুন্দর, শ্বেত-শুভ্র মেঘমালা, দিগন্ত-বিস্তৃত ফসলের মাঠ; যেন কোন এক চিত্রকর সুবিস্তৃত মাঠে এঁকেছে সবুজের আলপনা। অগ্রহায়ণে সোনালী ফসলে ভ'রে যেত মাঠ। কিষাণ-কিষাণীর সুনিপুণ কর্মব্যস্ততা! আলপথ ধ'রে হেলেদুলে চলত আসমানীরা; নীল আসমান যেন ওদের ছায়া সঙ্গী। প্রিয়তমার ঠোঁটে মখমলে হাসি আর নক্ষত্র খচিত আলো ঝলমলে সন্ধ্যা রাতগুলো যেন আজও পিছু টানে। অনেক ঋণ তাদের কাছে, শোধিব কেমনে! তবু মনের আকুতি থেকেই লিখতে বসেছি। লেখাটা সমাজে কতটুকু ভ্যালু অ্যাড করবে জানি না। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, অনেক সময় নিজের ঢোল নিজেই পেটাতে হয়। অন্তত: নিজের কথা নিজের কাছে বলা তো যাবে! রবি বাবু ছাড়া আর কে-ই বা বলতে পারেন এমন দরদী কথা! তথাপি না বলা অনেক কথাই থেকে যাবে হয়তো! পড়তে পড়তে পাঠক নিশ্চয় ফিরে যাবেন সেই কৈশোরে; মেয়েবেলা বা ছেলেবেলায়। কারণ, এ যে আপনারই কথা; ফেলে আসা জীবনের সাতকাহন! বরেন্দ্র এলাকার ছোট্ট একটি গ্রাম ‘বানিহারা’। গ্রামের নামকরণ কীভাবে হয়েছে, কখন হয়েছে জানা নেই। আয়তন প্রায় হাফ বর্গ কিলোমিটার। গ্রামের উত্তরে এক কিলোমিটার দূর দিয়ে হারাবতি নদী বয়ে গেছে। বর্ষাকালে দু’কূল ছাপিয়ে প্রবাহিত হতে দেখেছি। হারাবতিকে তুলশীগঙ্গা নদীর একটি শাখা বলা যায়। ‘আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে', ঠিক সে রকমই। বর্ষাকালে টইটুম্বুর; শুষ্ক মৌসুমে হাঁটুজল, বড়জোর কোমর সমান পানি থাকত। সেকালে গ্রাম ছিল বেশ পশ্চাদপদ। গাঁও-গেরামে তখন ছিল না কোন বৈদ্যুতিক বাতি, না ছিল নিয়ন বাতির ঝলমলে আলোর ব্যবস্থা। ছিল অঢেল পূর্ণিমা চাঁদের নিটোল জোছনা। গ্রামের অলিগলি, গাছগাছালি আর বাঁশ বাগানে ঠিকরে পড়ত সে আলোর ঝলকানি। আলো আঁধারি রাতে সারা গ্রাম চষে বেড়াতাম। রাত বিরাতে ঘুটঘুটে অন্ধকারে কত যে বেড়িয়েছি তোফাজ্জল আর আমি। আঁধারের পাখি জ্বোনাকীরা বাতি জ্বালিয়ে পথ দেখাত। আর ঝিঁঝিঁ পোকার আওয়াজে গা ছমছম করত! চলাফেরায় সাবধানী পা ফেলতে হতো। অমাবশ্যার ঘন অন্ধকারে সাপ, ব্যাঙ নি:শব্দে পথভ্রমণে বের হতেও তো পারে! তবে ঘুরতে ফিরতে তেমন অসুবিধা বোধ করতাম না। হাতে থাকত দুই ব্যাটারি এভারেডি টর্চ লাইট। দিনের বড় অংশ কেটে যেত স্কুলে, বাকিটা খেলাধূলায়। গ্রাম বাংলার মুক্ত আলো বাতাস ছিল প্রকৃতির অপার দান। কাদামাটির সেই গ্রামই আমার জন্ম ঠিকানা। গ্রামের মানুষজন ছিল কর্মঠ ও পরিশ্রমী। তুষ্ট হতেন অল্পতেই, ছিলেন সততাই পরিপুষ্ট। গ্রামে গুটিকয়েক অলস মানুষও ছিল। তাদের সংসারে টানাপোড়েন ছিল বেশ। জমিজিরাত বিক্রি করে তাদের নিঃস্ব হয়ে যেতে দেখেছি। তখন তো পেশার বৈচিত্র্য ছিল না বললেই চলে। কৃষির পাশাপাশি বহু মানুষ দিনমজুর হিসেবে কর্মে নিয়োজিত থাকতো। উনিশ শত ষাট, সত্তরের বা পঞ্চাশের দশকের গ্রাম বাংলা মোটা দাগে এ রকমই ছিল।

Title:জাপিত জীবনের সাতকাহন (হার্ডকভার)
Publisher: সপ্তর্ষি প্রকাশন
ISBN:9789849970965
Edition:1st Published, 2025
Number of Pages:160
Country:Bangladesh
Language:Bengali
Loading...
Loading...
Loading...
Loading...
Loading...

Reviews and Ratings

How to write a good review

Your Rating
*
Your Review
*
[1]
[2]
[3]
[4]
[5]
0

৳ 0